সোমবার, ২০ মে ২০২৪ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জাতীয়

পর্যটন শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা

আবুল কালাম
১৯ ডিসেম্বর ২০২১

করোনা মহামারীর প্রকোপ কমে আসায় প্রায় দুই বছর পর দেশের পর্যটন শিল্পে ধীরে ধীরে প্রাণ ফিরতে শুরু করেছে। বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্পটে মানুষের ঢল এই খাতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দুই বছর পর এই প্রথম পর্যটন খাতে প্রাণ ফিরেছে। মানুষের প্রাণচাঞ্চল্যে সম্ভাবনাময় এ শিল্প ঘুরে দাঁড়ানোর বার্তা দিচ্ছে।

দেশের অন্যতম তিন পর্যটন এলাকা কক্সবাজার, সিলেট ও রাঙ্গামাটিতে এ ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিজয় দিবসের ছুটিতে এই তিন স্থানেই প্রায় সাড়ে ছয় লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। এর বাইরে কুয়াকাটা, বান্দরবানসহ পর্যটনকেন্দ্রিক প্রায় সব জায়গায় মানুষের ঢল নেমেছে। কোথাও খালি নেই হোটেল-মোটেল। অনেকে নিরুপায় হয়ে স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, করোনায় দেশী ট্যুর অপারেটরদের হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। অভ্যন্তরীণ পর্যটনের মাধ্যমে কিছুটা ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন ব্যবসায়ীরা।

ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো: রাফেউজ্জামান জানান, আন্তর্জাতিক পর্যটন বন্ধ থাকায় অভ্যন্তরীণ স্পটে পর্যটক বাড়ছে। ফলে পর্যটন খাত গতিশীল হচ্ছে। এটা অবশ্যই ইতিবাচক। কারণ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার অন্যতম মাধ্যম হলো অভ্যন্তরীণ পর্যটন। কিন্তু বিদেশী পর্যটক না এলে দেশীয় পর্যটনের ইমেজ সঙ্কটে পড়ে। তাই দেশীয় পর্যটকের সাথে সাথে বিদেশী পর্যটকদের যাতায়াত চালু করাটাও জরুরি।

অন্য দিকে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ ও বিপণন) মো: জিয়াউল হক হাওলাদার জানান, বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলোতে সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ লাখ পর্যটক অবস্থান করছেন। তিনি বলেন, বিদেশী পর্যটক বন্ধ থাকায় অভ্যন্তরীণ পর্যটক অনেক বেড়ে গেছে। তাদের ধারণা, আগামী বছরের মধ্যেই করোনায় সঙ্কটে পড়া এ খাত ঘুরে দাঁড়াবে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: আবুল কাশেম সিকদার জানান, গত দুই দিনে কক্সবাজারে প্রায় সাড়ে চার লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। হোটেল-মোটেলে আবাসন সঙ্কট তৈরি হয়েছে। কারণ কক্সবাজারে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চার শতাধিক হোটেল, মোটেল, রেস্ট হাউজ ও রিসোর্ট রয়েছে। তিনি বলেন, প্রায় দুই বছর লোকসান শেষে এবার তারা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন। এভাবে চলতে থাকলে এ খাতে আবারো সোনালি সময়ে ফিরবে বলে তাদের প্রত্যাশা। অপর দিকে কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনু জানান, গত দুই দিনে এখানে সবচেয়ে বেশি পর্যটকের আগমন ঘটেছে। আর প্রাকৃতিক নিসর্গে ঘেরা রাঙ্গামাটিতেও একই অবস্থা। জেলার আকর্ষণীয় স্পট ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝরনা, সাজেক ভ্যালি, পলওয়েল পার্ক ও হ্রদে পর্যটকদের ভিড় লক্ষণীয়। এ দিকে সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউজ ওনার্স গ্রুপের সুমেয়াত নূরী জানান, অতিরিক্ত পর্যটক আসায় আবাসন নিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। কারণ সিলেটে প্রায় ৩০টির মতো হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এর বাইরে সঠিক হিসাব না থাকলেও হোটেল রয়েছে প্রায় আড়াই শ’। কিন্তু বর্তমানে সিলেটে প্রায় দেড় লাখের মতো পর্যটক অবস্থান করছেন। তারা সাদাপাথর, জাফলং, বিছানাকান্দি, রাতারগুল, টিলাগড় ইকোপার্ক, লাক্কাতুরা চাবাগান ও হজরত শাহজালাল, শাহপরাণ মাজারসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে ভিড় করছেন।

নতুন গ্রাহকদের জন্য ৫০ টাকা বোনাস অফার নিয়ে এলো ‘ট্যাপ’
৫০ বছরে পর্যটকের সংখ্যা একশ গুণ, বেড়েছে পর্যটন কেন্দ্রও

আপনার মতামত লিখুন