মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
অর্থনীতি

পর্যটকশূন্য কক্সবাজার সৈকত, পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা

অনলাইন ডেস্ক
১৯ মার্চ ২০২০

করোনাভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে ভ্রমণে নিরুৎসাহিতকরণ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মধ্যে কক্সবাজারে সমুদ্র সৈকতসহ পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকশূন্য হয়ে গেছে।

এছাড়া বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসন কক্সবাজারের সকল পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে।

একইসঙ্গে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সমুদ্র সৈকতসহ সকল পর্যটন কেন্দ্রে জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারপত্র বিলির পাশাপাশি মাইকিংও করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের ফেইসবুকেও এই নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে।

দুপুরে সরেজমিনে সমুদ্র সৈকতে গিয়ে কোনো পর্যটকের দেখা মেলেনি। কোনো পর্যটক আসতে চাইলে ট্যুরিস্ট পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সরিয়ে দিচ্ছেন।

প্রশাসনের এই জরুরি সিদ্ধান্তে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকরা বিপাকে পড়েছে। ট্যুরিস্ট মার্কেটসহ সংশ্লিষ্ট বিপণীবিতানগুলোও ক্রেতাশূন্য হয়ে পড়েছে। হোটেল-মোটলগুলোর নতুন বুকিং হচ্ছে না।

বৃহস্পতিবার সকালে সমুদ্র সৈকত ঘুরতে আসা মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা শামশুল আলমের সঙ্গে কথা হয়।

শামশুল আলম বলেন, মঙ্গলবার সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে এসেছেন; কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশনার কারণে সৈকতে ঘুরতে না পেরে হোটেল কক্ষে ফিরে যাচ্ছেন।

তবে জনস্বার্থে প্রশাসন এ ব্যবস্থা নেওয়ায় কোনো আক্ষেপ নেই বলে জানান এ পর্যটক।

করোনাভাইরাসের এই মহামারী অবস্থার মধ্যে ক্ষতির মুখ পড়েছেন হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্টের ছাতা মার্কেটের দোকানী মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, সৈকত এলাকা পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কোনো ক্রেতার দেখা মেলেনি।

অভিজাত হোটেল দি কক্স টুডে-এর ব্যবস্থাপক মো. আবু তালেব বলেন, হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের বিপাকে পড়তে হয়েছে। অনেকে হোটেল কক্ষের অগ্রিম বুকিং বাতিল করেছেন।

পাশাপাশি বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নতুন করে কেউ হোটেল কক্ষ বুকিং করেনি বলেও জানান তিনি।

ঢাকার লালমাটিয়া থেকে আসা নাসরিন আক্তার বলেন, “সৈকতে ঘুরতে আসলেও ট্যুরিস্ট পুলিশ কাউকে নামতে দিচ্ছে না। যারাই আসছে তাদের পুলিশ সৈকতে না নামতে নিষেধ করছে।”

এছাড়া কক্সবাজারের অন্যসব পর্যটন কেন্দ্রেও একই ধরনের বিধিনিষেধ থাকায় কোথাও ঘোরার সুযোগ নেই; তাই বৃহস্পতিবার রাতেই ঢাকায় ফিরে যাবেন বলে জানান তিনি।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের সকল পর্যটন কেন্দ্রগুলো পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। জনস্বার্থে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন আরও জানান, কক্সবাজারে সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেলের কোনোটিতে অভ্যন্তরীণভাবে কোনো সভা-সমাবেশ কিংবা কনফারেন্সসহ জনসমাগম ঘটে এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনে করা যাবে না।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা মতো কোনো পর্যটন কেন্দ্রে যাতে জনসমাগম না ঘটে সে জন্য পুলিশ নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। বিভিন্ন পর্যটন পয়েন্টে নিয়োজিত রয়েছে পুলিশের টহল দল। পর্যটকরা যাতে কোনো পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ নজরদারী অব্যাহত রেখেছে।

কক্সবাজারে যাতে পর্যটকবাহী কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে না সেজন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়া উপজেলার হারবাং এলাকায় পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বলেও জানান এসপি মাসুদ।

ট্যুরিস্ট পুলিশও এ ব্যাপারে তৎপর রয়েছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফখরুল ইসলাম।

ফখরুল বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা মতো সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ সদস্যদের নিয়োজিত করা হয়েছে। এছাড়া সমুদ্র সৈকতসহ কক্সবাজারের সবকটি পর্যটন কেন্দ্রে ট্যুরিস্ট সদস্যরা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন।

এছাড়াও পর্যটকদের সচেতন করতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা মাইকিংসহ প্রচারপত্র বিলি করছে বলে জানান ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

সাভারের সব বিনোদন পার্ক অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা
করোনা: টাঙ্গাইলের ২০১ গম্বুজ মসজিদে জুমার নামাজ বন্ধ

আপনার মতামত লিখুন